২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬

কিয়ামত দিবসের আট সাক্ষী

কিয়ামত দিবসের আট সাক্ষী - ছবি : নিউজমিডিয়া24

কিয়ামত দিবসের বিভীষিকাময় অবস্থার কথা কে না জানে, সেদিন প্রত্যেকে এমন দিশেহারা হবে যে, সবাই তার আপনজনের কথা, অর্থসম্পদের কথা ভুলে যাবে। এমনকি পশুরাও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। সেদিন এসব ভীতিকর জিনিসের সাথে আরো একটি ভীতিকর বিষয় হলো- আমাদের পার্থিব জীবনের কাজের ব্যতিক্রমী সব সাক্ষী। সেদিন এমন আট সাক্ষী হবে, যা অস্বীকার করার কোনো উপায় ও সুযোগ থাকবে না। নিম্নে সে আট সাক্ষী নিয়ে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে আলোচনা তুলে ধরা হলো-

১. স্থান বা জায়গা : শয়তানের ধোঁকায়, নফসের প্ররোচনায়, পরিবেশের তাড়নায়, কমবেশি সবাই গুনাহ করে থাকে, তো এই গুনাহ যে স্থান বা জায়গায় করা হয়, কাল কিয়ামতের বিভীষিকাময় দিনে জমিনের ওই অংশ আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘সেদিন পৃথিবীর তার যাবতীয় সংবাদ জানিয়ে দেবে।’ (সূরা যিলযাল-৪)

বোঝা গেল, ভূমিতে মানুষ যত ভালো বা মন্দ কাজ করে, সেদিন জমিন সে সম্পর্কে আল্লাহর দরবারে সাক্ষ্য দেবে।

২. সময় : সকাল দুপুর বিকেল তথা রাত-দিনের কোনো-না-কোনো সময়েই গুনাহের ওই কাজটি করা হয়ে থাকে। কাল কিয়ামতের দিন, সময়ের ওই অংশটুকু আল্লাহ তায়ালার দরবারে সাক্ষী হয়ে দাঁড়াবে। হজরত হাসান বসরি রহ: বলেছেন, ‘প্রতিটি দিন মানুষকে ডেকে বলে, আমি নতুন দিন, আমার ভেতর যে গুনাহ যে রকম কাজ করা হবে, কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য সেই রকম সাক্ষী দেবো।’ (কুরতুবি-১৯/২৪৫)

৩. জিহ্বা : মহান আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি মানুষের এক ক্ষুদ্রাকায় অঙ্গ হলো জিহ্বা। জিহ্বা আকারে ছোট হলেও এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া অনেক বড়। এই জিহ্বার মাধ্যমে মানুষ তার মনের ভাব, অভিব্যক্তি ও কামনা-বাসনা আদান-প্রদান করে থাকে। ভাব প্রকাশের এই মাধ্যমটিকে সত্য-সঠিক ও কল্যাণকর ক্ষেত্রে ব্যবহার করাই যুক্তিযুক্ত। এর বিপরীতে অনর্থক ও অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জিহ্বা ব্যবহার করা মারাত্মক গুনাহ। রাসূলুল্লা সা: বলেছেন, ‘যেকোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অনর্থক কথা ত্যাগ করা।’ (তিরমিজি-২৩১৭) এই জিহ্বার মাধ্যমে মানুষ যেসব গুনাহ করে থাকে, কাল কিয়ামতের ময়দানে জিহ্বা তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘যেদিন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে তাদের বিরুদ্ধে তাদের জিহ্বা, হাত ও তাদের পা সাক্ষ্য দেবে।’ (সূরা নূর-২৪)

৪. শরীরের অন্যান্য অঙ্গ : শরীরের মধ্যে আরো যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে, নির্দিষ্ট ওই অঙ্গ দিয়ে যে গুনাহ করা হয়েছে, শরীরের ওই অঙ্গ কাল কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর দরবারে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেবো। ফলে তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের।’ (সূরা ইয়াসিন-৫৫)



আরো সংবাদ


AD HERE