২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬

বিশ্বাসঘাতক শামির বিশ্বরেকর্ডে তোলপাড় ক্রিকেট পাড়া

বিশ্বাসঘাতক শামির বিশ্বরেকর্ডে তোলপাড় ক্রিকেট পাড়া - ছবি : নিউজমিডিয়া24

রেকর্ড প্রসবা ভারতের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রেকর্ডের বন্যা যেন বইছে পুরো ম্যাচ জুড়ে। রোহিত শর্মার ছক্কায় শুরু, বিরাট কোহলির ইতিহাস গড়া শতক, শ্রেয়াস আইয়ারে ঝড় আর ভারতের ইতিহাস গড়া সংগ্রহ। আরো রেকর্ড আছে অসংখ্য। তবে সব ছাপিয়ে সবার মুখে মোহাম্মদ শামি। শেষ বেলায় সব আলো নিজের দখলে নিয়েছেন ভারতীয় এই বোলার তিনি।

অথচ কত অভিযোগ উঠতো তাকে নিয়ে। একটু নড়চড় হলে বিদ্রুপ করা হতো ‘পাকিস্তানি’ বলে। দূর থেকে দর্শকরা না হয় বুঝেনি, বুকে মাথা রেখেও তাকে বুঝতে পারেননি স্ত্রী। এমনকি স্ত্রীর মামলায় ক্যারিয়ারেও শেষ হওয়ার মতো হয়েছিল। তবে অদম্য শক্তিতে ভরপুর শামি তাতে ঘাবড়ে যাননি।

ঘাবড়ে যাননি বলেই তো শুরুর দিকে একাদশে সুযোগ না পেয়েও শামিই এখন বিশ্বকাপের সেরা বোলার। চার ম্যাচ বেঞ্চে কাটিয়েও সবার ওপরে নাম তার। হার্দিক পান্ডিয়ার চোটে কপাল খোলে তার। এরপর ছয় ম্যাচেই নিয়েছেন ২৩ উইকেট। যেখানে বুধবারসহ ৫ উইকেট নিলেন তিন-তিনবার! মাত্র ছয় ম্যাচেই তিনবার পাঁচ উইকেট।

এক আসরে তিনবার পাঁচ উইকেট, যা এক টুর্নামেন্টে যেকোনো বোলারের জন্য সর্বোচ্চ। আরো একটা রেকর্ডের হাতছানিও আছে তার সামনে। এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের তালিকায় শামি আছেন তৃতীয় স্থানে। ফাইনালে ৪ উইকেট নিতে পারলে হয়তো মিচেল স্টার্কের ২০১৯ বিশ্বকাপের রেকর্ডটাও ভেঙে ফেলবেন।

অবশ্য একটা জায়গায় স্টার্ককে ছাড়িয়ে গেছেন ইতোমধ্যেই। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার ৫ বা তার চেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামি, মোট ৪ বার। যেখানে মিচেল স্টার্ক নিয়েছেন তিনবার। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপে সবচেয়ে দ্রুত পঞ্চাশ উইকেট নেয়ার দৌড়েও পেছনে ফেলেছেন স্টার্ককে। শামি যা করেছেন ১৭ ম্যাচে, স্টার্কের ম্যাচ লেগেছিল ১৯টি।

চলতি বিশ্বকাপের সেরা বোলিং ফিগারও এখন শামির।

বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৭ রানে ৭ উইকেট নেন শামি। যা বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই পঞ্চম সেরা বোলিং। আর বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে সর্বকালের সেরা। একই সাথে প্রথম ভারতীয় হিসেবে ওয়ানডেতে সাত উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন শামি।

এমন সব রেকর্ডের স্বীকৃতিও পেয়েছেন শামি। কোহলির রেকর্ড গড়া শতক কিংবা শ্রেয়াস আইয়ের ঝড়ো ইনিংস ছাপিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার ঝুলিতে। একই সাথে শামি এক যুগ পর নিজ দেশকে উঠিয়েছেন বিশ্বকাপের ফাইনালে।

অথচ গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারার পর শামিকে নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। বলা হয়েছিল পাকিস্তান চলে যেতে। দেয়া হয়েছিল ‘বেইমান’ আর ‘বিশ্বাসঘাতক’ উপাধি।

কিন্তু যখন স্বপ্নের ফাইনালের নায়ক হলেন, তখন কি ভারতীয়রা তাকে তার প্রাপ্য সম্মানটা দেবে? যতটা সমালোচনা তখন হয়েছিল, ততটা প্রশংসা এখন কি পাবেন মোহাম্মদ শামি!

আরো সংবাদ


AD HERE