২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬

কবর জিয়ারতে পরকালীন ভাবনা

কবর জিয়ারতে পরকালীন ভাবনা - ছবি : নিউজমিডিয়া24

ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ একবাক্যে মেনে নেয় যে, প্রত্যেকের মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘জীবমাত্রকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভালো দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং তোমাদের সবাইকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনা হবে।’ (সূরা আম্বিয়া-৩৫) অপর এক আয়াতে বর্ণিত হয়েছে- ‘তোমরা যেখানেই থাকো (এক দিন না এক দিন) মৃত্যু তোমাদের নাগাল পাবেই, চাই তোমরা সুরক্ষিত কোনো দুর্গে থাকো না কেন।’ (সূরা নিসা-৭৮) প্রতিটি মুসলমানের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- সদা-সর্বদা পরকালের চিন্তা ধারণ করা ও অন্তরে লালন করা।

পরকালীন চিন্তা-ভাবনা সর্বদা জাগ্রত রাখার সর্বোত্তম মাধ্যম হলো-কবর জিয়ারত। কবর জিয়ারত মুসলমানদের হৃদয়ে মৃত্যু ও পরকালীন ভাবনা জাগিয়ে তোলে, কবর জিয়ারত হৃদয়কে নরম ও কোমল করে তোলে। গুনাহ বর্জনের প্রেরণা ও নেক কাজের আগ্রহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি করে তোলে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আমি তোমাদেরকে কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম, এখন তোমরা কবর জিয়ারত করো।

কবর জিয়ারত দুনিয়ার আকর্ষণ কমিয়ে দেয়, পরকালের স্মরণ ও ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।’ (ইবনে মাজাহ-১৭৬৯) আরেকটি হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসূল সা: বলেছেন, ‘কবর হলো জান্নাতের উদ্যানসমূহের একটি উদ্যান। অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহের একটি গর্ত।’ (তিরমিজি-২৪৬০)

বোঝা গেল, একজন মুমিনের মৌলিক চিন্তা হবে পরকাল সম্পর্কে। সদা-সর্বদা পরকালের সুখ-শান্তি ও নাজ-নিয়ামতের ভাবনায় ডুবে থাকবে। বিষয়টি একটি হাদিস দ্বারাও বোঝা যায়। রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজের সব চিন্তাকে এক চিন্তায় তথা পরকালের চিন্তায় নিবদ্ধ রাখে, আল্লাহ তায়ালা তার দুনিয়া যাবতীয় উদ্দেশ্য পুরা করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হয়ে যান, আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার নানা দিকের চিন্তায় ব্যতিব্যস্ত হয়ে থাকে, তার জন্য আল্লাহর কোনো পরোয়া নেই। (দুনিয়া যেকোনো স্থানে যেকোনো অবস্থায়) ধ্বংস হোক না কেন, আল্লাহর কোনো পরোয়া নেই।’ (ইবনে মাজাহ-২৫৭) অপর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘সব সাধ বিনাশকারী মৃত্যুর কথা বেশি বেশি আলোচনা করো।’ (তিরমিজি-২৩০৭) স্বয়ং নবী করিম সা: মাঝে মধ্যে কবর জিয়ারত করতেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, আয়েশা সিদ্দিকা রা: বলেন, রাসূল সা: ‘যে রাতগুলো আমার কাছে অবস্থান করতেন, তখন কখনো কখনো জান্নাতুল বাকি নামক স্থানে কবর জিয়ারতে বের হতেন।’ (মিশকাত-১৭৬৬)

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া কাশেফুল উলুম মাদরাসা, মধুপুর, টাঙ্গাইল

আরো সংবাদ


AD HERE